বিয়ের প্রায় ১৭ বছর পর একশ বরযাত্রী নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করলেন এক দম্পতি। আত্মীয় – স্বজন, প্রতিবেশীর পাশাপাশি নিজেদের সন্তানেরাও ছিলেন বরযাত্রী। গান বাজনা বাজিয়ে বরযাত্রী নিয়ে দম্পতি ঘুরেছেন সাতটি গ্রাম। এমন বিয়ের অনুষ্ঠান এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দম্পতি হলেন- ওই গ্রামের দিয়ানত ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৬) ও মৃত লোকমান শাহের মেয়ে হেলেনা খাতুন (৩০)। সাইফুল বর্তমানে পেশায় একজন ব্যবসায়ী।

সাইফুল ইসলাম বলছেন, ‘মানত রক্ষার্থে ১৭ বছর পরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করলাম। নিজের ছেলে-মেয়েরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল। বরযাত্রী নিয়ে গান বাজনা বাজিয়ে ঘুরেছি সাত গ্রাম। ’

এলাকাবাসীরা জানায়, সাইফুল ও হেলেনার মাঝে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রায় ১৭ বছর আগে গ্রামবাসী জোর করে তাদের বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এমন বিয়ে সেদিন মন থেকে মেনে নিতে পারেনি সাইফুল। মনে মনে মানত করেছিলেন সামর্থ হলে ১০০ বরযাত্রী নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান করবেন। তাই মানত রক্ষার্থে শুক্রবার আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী ও তাঁদের দুই সন্তানসহ প্রায় ১০০ বরযাত্রী নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করছেন। গান বাজনা বাজিয়ে প্রায় সাত গ্রাম ঘুরেছেন বর, বউ ও বরযাত্রীরা।

বর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘১৭ বছর আগে গ্রামবাসী আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেই বিয়ে মন থেকে মানতে পারিনি। তাছাড়াও অনুষ্ঠান করে বিয়ের সামর্থ ছিল না তখন। তাই মানত করেছিলাম। এখন সামর্থ হয়েছে। ১০০ বরযাত্রী নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করেছি। অনুষ্ঠানে ১০ বছর বয়সের ছেলে ও ৭ বছর বয়সের মেয়েও ছিল। আজ থেকে বিয়ে মেনে নিলাম।

চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর মনোয়ার হোসেন লালন বলেন, ‘বর আর বউয়ের মাঝে আগে প্রেম ছিল। জনগণ সেসময় বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বরের ইচ্ছে ছিল অনুষ্ঠান করে বিয়ে করার। ১৭ বছর পরে সেই ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। এমন বিয়ের অনুষ্ঠান আগে কখনও হয়নি।